Tuesday, 22 June 2021

পুরুলিয়া ভ্রমণের সম্পূর্ণ গাইড





লেখাটি কেমন লাগল দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।  আমার ভ্রমণের Youtube চ্যানেল Bhromon India 

পুরুলিয়া পশ্চিম বঙ্গের অন্যতম একটি জেলা।  অতীতে এখানে বিভিন্ন রকম সমস্যা থাকলেও বর্তমানে এটি একেবারেই শান্ত জায়গা।  আর পাহাড়, জঙ্গল ও জলাধার ঘেরা পুরুলিয়া বরাবরই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী।  এই ভ্রমণ গাইডের থেকে পাবেন টুসু-ঝুমুরের দেশ পুরুলিয়া ঘুরবার সম্পূর্ণ তথ্য।  
  • সংক্ষেপে বিশেষ তথ্য 
    • কি ধরনণের ঘুরবার জায়গা: প্রকৃতি - জঙ্গল, পাহাড়,  জলাধার ও জলপ্রপাত 
    • বছরের কখন ঘুরতে যাওয়া যায়:  শীত (অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি)  ও বসন্তকাল (মার্চ ও এপ্রিল, লাল পলাশের সময়) 
    • কত সময় প্রয়োজন ঘুরবার জন্য: ৩ দিন বা তার বেশি 
    • কাছের বড় শহর: পুরুলিয়া শহর 
    • কিভাবে যাওয়া যায়: ট্রেন, বাস, গাড়ি 

  • সংক্ষিপ্ত ইতিহাস 
  • কিভাবে যাবেন,  
    • ট্রেন: হাওড়া থেকে চক্রধরপুর এক্সপ্রেস ট্রেন, হাওড়া থেকে রাত্রি ৯:০৫ ছেড়ে যায় ও পুরুলিয়া জংশন এ পৌঁছায় সকাল ৬:২০ মিনিটে।  পুরুলিয়া থেকে একই ট্রেনে ফিরতে পারবেন, ফিরবার ট্রেন পুরুলিয়া জংশনে রাত্রি ৯:১০ মিনিটে ও হাওড়া পৌঁছায় সকাল ৪:৩০ মিনিটে।  
    • বাস: ধর্মতলা থেকে অনেক বাস পুরুলিয়ার উদ্দেশ্য ছাড়ে , তবে ট্রেন জার্নি বেশি নিরাপদ ও আরামদায়ক। 
    • গাড়িতে:  কলকাতা থেকে গাড়িতে ৫ ঘন্টায় পুরুলিয়া পৌঁছানো যায়।  দিল্লি রোড ধরে দুর্গাপুর বা আসানসোল হয়ে পৌঁছানো যায় পুরুলিয়া শহরে।  গুগল ম্যাপ আপনার এই রাস্তা সাহায্য করতে পারে।  
পুরুলিয়ার গ্রামে প্রচলিত মোরগের লড়াই - ১লা মাঘ 
  • কোথায় কোথায় ঘোরা যায়?
পুরুলিয়ায় ঘুরবার জায়গা অনেকগুলি যা ভালভাবে পুরো ঘুরে দেখতে বেশ কয়েকদিনের প্রয়োজন।  তবে ৩ তিন হলে একপ্রকার সকল জায়গাগুলি ঘুরে পারেন।  যদি আপনি ট্রেন বা বাসে করে পুরুলিয়া পৌঁছে গাড়ি ভাড়া করে ঘুরতে চান তবে নিচে দেয়া ম্যাপ (ম্যাপ ১-৩) অনুসারে ঘুরতে পারেন।  আর যদি নিজের গাড়ি থাকে তবে আমরা যে ভাবে ঘুরেছি সেটাও করতে পারেন (ম্যাপ ৪) . আমাদের ঘুরবার ভ্রমণ ভিডিও আমার  youtube চ্যানেল থেকে দেখে নিতে পারেন (Bhromon India চ্যানেল )। 

পুরুলিয়া জায়গাগুলি দুটি ভাবে বিভক্ত, অযোধ্যা পাহাড় সার্কিট ও গড় সার্কিট ।  অযোধ্যা পাহাড় এলাকাটা পুরুলিয়া শহর দক্ষিণ / দক্ষিণ - পশ্চিম দিকে অবস্থিত।  এবং গড় সার্কিট পুরুলিয়া শহরের উত্তর /উত্তর - পূর্ব দিকে অবস্থিত। আমার  ঘুরবার একটা ধারণা এখানে দিচ্ছি তবে  আপনি আপনার পছন্দ মত জায়গা গুলি ভাগ করে ঘুরে নিতে পারেন। 


দিন ১ - গড় সার্কিট 

পুরুলিয়া শহর পৌঁছে হোটেল নিয়ে নিন ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের কাছে বা পোস্ট অফিস এর কাছে।  এর ফলে এখানে খাবারের জায়গা পেয়ে যাবেন এবং এখানে থেকেই ট্যাক্সি নিয়ে নিতে পারবেন। গাড়ির ভাড়া নিয়ে এখানে দরদাম হয়ে থাকে। সকাল সকাল থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন গড় সার্কিটের উদ্দেশ্যে এবং নিচের জায়গাগুলো যথা সম্ভব ঘুরে নেবার চেষ্টা করুন।  তবে সব জায়গা গুলো ঘুরতে গেলে আপনি বেশি সময় কোথাও দিতে পারবেন না।  ফলে আপনায় নিজেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কম সময়ে ঘুরবেন নাকি বেশ সময় নিয়ে ঘুরবেন।  ভালভাবে গড় সার্কিট ঘুরতে গেলে ২ দিন সময় প্রয়োজন।  




  1. কাশিপুর রাজবাড়ী, এই রাজবাড়ীর সাথে মাইকেল মধুসুধন দত্তের ইতিহাস জড়িত আছে।  মাইকেল একসময় এই রাজবাড়িতে চাকরি করতেন। পঞ্চকোট রাজপরিবার প্রায় ৮০০ বছর ধরে কাশিপুর শাসন করেন এবং  এই রাজবাড়িটি তৈরি করেন মহারাজা নীলমনি সিং দেও /সিংহ এই রাজবাড়িটি তৈরি করেন।  এই রাজবাড়ী তৈরী করতে প্রায় ১০ বছর সময় লাগে।  পুরুলিয়ার ইতিহাসের সাথে জড়িত আছে এই রাজবাড়ী।  মনে রাখবেন এই রাজবাড়িটি দুর্গাপূজার সময় সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেয়া হয়।  ফলে অন্য সময় এখানে গেলে ভেতরে ঢুকতে পারবেন না।

  1. জয়চণ্ডী পাহাড় পুরুলিয়ার  অন্যতম আকৰ্ষণ।  জয়চন্ডি পাহাড় জয়চন্ডী রেল স্টেশন থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।  আদ্রা স্টেশন থেকেও এখানে চলে আসা যায়।  এই পাহাড়ে সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশে ছবির শুটিং হয়েছিল।  এছাড়া আরো বেশ কিছু ছবির শুটিং এখানে হয়েছে।  এই পাহাড়ের ওপরে আছে জয়চন্ডী মন্দির ও বজরং মন্দির। এই পাহাড়ে উঠবার সিঁড়ি আছে তবে ওপরে উঠতে গেলে ৫০৩ টি সিঁড়ি চড়বার প্রয়োজন হবে।  ফলে এখানে উঠবার সময় সঙ্গে জল ও হালকা খাবার/চকলেট রাখবেন।  ওই এলাকার বিখ্যাত ব্যাবসায়ী জয় আগরওয়াল ও ওম প্রকাশ আগরওয়াল এই সিঁড়ি গুলি নিজেদের খরচে বানিয়েছেন।  জয়চন্ডির কাছে সরকারি গেস্ট হাউসে থাকবার ব্যবস্থা আছে।  


৩. গড়পঞ্চকোট মন্দির ছিল সিং দেও রাজত্বের অংশ।  এই মন্দির গুলি বর্গী আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং অধিকাংশ ধ্বংস হয়।  এখনো সেসব মন্দিরের কিছু অবশিষ্ঠ আছে।  গড় সার্কিট ঘুরবার সময় অবশ্যই এই জায়গাটি ঘুরে নেবেন।  এখানে অনেক হোটেল আছে ফলে দুপুরের বা বিকালের খাবার পেয়ে যাবেন। পুরুলিয়া শহর থেকে গড়পঞ্চকোটের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার।  



পাঞ্চেৎ ড্যাম,  গড় পঞ্চকোট থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাঞ্চেৎ ড্যাম।  এই ড্যামটি পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ড দুই রাজ্যের বর্ডারে আছে এই ড্যামটি। ধানবাদ এখন থেকে একটু দূরে।  গড় পঞ্চকোট ঘুরে এই ড্যামটিও ঘুরে নিতে পারেন।  
ছবিটি গুগল থেকে নেয়া 



বড়ন্তি /বরন্তি পাহাড় ও তার পাদদেশে আছে বড়ন্তি লেক।  বড়ন্তি পাহাড় লেকের দক্ষিণ পশে অবস্থিত।  লেকের উত্তর পশ্চিম পাশের পাহাড়টিকে মানুষ ভুল করে বড়ন্তি পাহাড় মনে করে যা আসলে ভুল।  নিচের ছবিতে যে পাহাড়টি দেখা যাচ্ছে সেটি অন্য একটি পাহাড়।  বড়ন্তি লেকের পশে অনেক হোটেল রয়েছে যে খানে আপনি থাকতে পারেন।  বড়ন্তি লেকের সূর্যাস্ত সত্যিই অনবদ্য।  

এখানে থাকার হোটেল গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল 
Lake Hill Resort (সব চেয়ে ভাল জায়গায়, লেকের পশে)
Megho Roddur - www.meghoroddur.com - 7407859902, 9932611915
Akashmoni Resort
Spangle Wings Resort
Boronti Manbhum Resort
Pahar Toli Resort - 09932450165, 6296224880
Nature Study Hut


শুশুনিয়া পাহাড় 
  1. ফুটিয়ারি ড্যাম 

পৌষ সংক্রান্তিতে  টুসু উৎসব

পৌষ সংক্রান্তিতে মোরগের লড়াই 



 
বড় পাহাড়ে ১লা মাঘের (টুসু /পৌষ সংক্রান্তির পরের দিন) আদিবাসী উৎসব 


অকৃতিম প্রকৃতি 


হাজার বছরের পুরোনো জৈন্য মন্দির 


পুরুলিয়ার ভাষা আন্দোলন 


আদিবাসী গ্রামে 




দিন ২ - অযোধ্যা সার্কিট 



  1. মার্বেল লেক / পাতাল ড্যাম / নীল ড্যাম 


পড়ন্ত বিকালে আদিবাসী মহিলাদের ঘরে ফেরা 


  1. ময়ূর পাহাড় 
  2. খয়েরাবেড়া ড্যাম 
  3. চড়িদা গ্রাম / মুখোশ গ্রাম  


৪. বামনী ফলস




দিন ৩ - অযোধ্যা সার্কিট   



  1. আপার ড্যাম /Upper Dam 



  1.  লোয়ার ড্যাম 


  1. পাখি পাহাড়


  1. বামনী ফলস  
  2. চড়িদা গ্রাম / মুখোশ গ্রাম  
  3. পাখি পাহাড় 

  • কোথায় থাকবেন .


  • কোথায় খাবেন .
  • বিশেষ কি করবার আছে .
আদিবাসী গ্রামে আমি 

অফবিট পুরুলিয়া / হুড়ার প্রান্তে ঘোরাঘুরি

 শীতের সকালে গুড় তৈরি 




  • Closing note
  • Add photos, videos and reference where-ever is possible.
  • Use relevant and good label which helps to categorized post better and increase search capability on Google, so more people can read it.
বড়ন্তি লেকের সামনে আমরা 



মার্বেল লেক 

শালের জঙ্গল থেকে পাখি পাহাড়


Saturday, 12 June 2021

Mirik Travel

Tea garden, Pine forest and Lake is the main attraction of Mirik.  Mirik is one of the beautiful hill station near Darjeeling. People usually travel Mirik towards Darjeeling from NJP or at the time of returning. Here is the beautiful road view of Mirik.








Mirik Lake










Wednesday, 17 March 2021

রডোডেনড্রোন ফুলের স্বর্গ ভার্সে, সিকিম ভ্রমণ গাইড - Versery, Sikkim Travel Guide on Bhromon

লেখাটি কেমন লাগল দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।  আমার ভ্রমণের Youtube চ্যানেল Bhromon India 

সিকিমের এক প্রকার অফ বিট ভ্রমণ এর গন্তব্য বলা যেতে পারে দক্ষিণ-পশ্চিম সিকিমের ভার্সকে। জায়গাটি রোডডেনড্রোন ফুলের স্বর্গ রাজ্যও বলা চলে। ভার্সে ভ্রমণে আপনি পাবেন, নিরিবিলি এক পাহাড়ি গ্রাম ভ্রমণ, বিভিন্ন ধরণের ফুল, অজানা সব পাখি ও একটা সোজা ট্রেক। 
কোথায় থাকবেন?
ভার্সে পশ্চিম সিকিমের একটা ছোট্ট পাহাড়ি জায়গা। এই জায়গাটা জঙ্গলের মধ্যে লোকালয় থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বিচ্ছিন্ন। তবে এখানে থাকবার মত দুটি রিসোর্ট আছে। চাইলে সেখানে থাকতে পারেন। অথবা হিলে তেওঁ থাকা যেতে পারে। তবে সাধারণত সকলে ওকরে গ্রামে থেকে ভার্সে ঘুরে যায়। অথবা প্রথম রাত্রি ওকরে থেকে পরের দিন ভার্সের রিসোর্ট আসতে পারেন। ওকরে গ্রামে অনেক হোম স্টে আছে যেখানে আপনি থাকতে পারে। দৈনিক থাকা খাওয়া বাবদ মাথাপিছু খরচ পড়বে 900 থেকে 1200 টাকা। আমরা যে হোম স্টে তে ছিলাম তার ফোন নম্বর রইল।
রিনচেন:
+91 6295 997 432
+91 80018 01707
রিনচেন হোম স্টের বাড়ি মালিকের মেয়ে, খুব সুন্দর তার ব্যাবহার ও আতিথেয়তা। বিশদে জানতে আমার youtube ভিডিও দেখে নিতে পারেন।

 কি ভাবে যাবেন?
 ভার্সে যেতে গাড়ি আসবে হিলে পর্যন্ত। তবে হিলে ও ভার্সে দুটি জায়গাই জঙ্গলের মধ্যে ফলে আপনারা থাকতে পারেন ওকরে গ্রামে। 
 
আপনাকে প্রথমে আসতে হবে শিলিগুড়িতে। কলকাতা থেকে এলে উত্তর বঙ্গের যে কোনো ট্রেনে চলে আসুন শিলিগুড়ি বা নিউ জলপাইগুড়ি। সেখান থেকে আসতে হবে শিলিগুড়ি গাড়ি স্ট্যান্ডে।
শিলিগুড়ি থেকে শেয়ার গাড়িতে জর্থ্যাং/জোরথ্যাং সময় লাগবে প্রায় 3 ঘন্টা। ভাড়া 250 টাকা।জর্থ্যাং থেকে ওকরে যেতে সময় লাগে প্রায় 3 ঘন্টা, শেয়ার গাড়ির ভাড়া 200 টাকা। সকালে শিলিগুড়ি থেকে যাত্রা শুরু করলে জোর্থাং এসে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারেন। অথবা জোর্থাং থেকে ওকরে যাবার পথে সোমবারিয়া বলে একটা বাজার পড়বে, গাড়ি ওখানে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়ায়, সেখানেও খেয়ে নিতে পারেন।

 জোর্থাং থেকে ওকরে বাস যোগাযোগ আছে। তবে দিনে একটা বাস সকালে ওকরে থেকে ছেড়ে জোর্থাং যায় এবং দুপুরে ফিরে আসে। সকাল 7:30-8:00 এর মধ্যে একটা বাস আসে ওকরে থেকে জোর্থাং। দুপুর 1 টা নাগাদ আবার ফিরে যায়। বাসের ভাড়া 70 টাকা।

ওকরে থেকে হিলে যেতে কোনো পাবলিক গাড়ি বা বাস নেই। আপনার প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে আসতে হবে।
ওকরে থেকে হিলে প্রাইভেট গাড়ি লাগবে ভাড়া 1200 থেকে 1500 টাকা। সারা দিন গাড়ি অপেক্ষা করবে আপনার ঘুরে আসবার জন্য।

ভার্সে ট্রেক
হিলেতে গাড়ি রেখে ট্রেক করে পৌঁছাতে হয় ভার্সতে। এই ট্রেক এর জন্য বা জঙ্গলে প্রবেশের জন্য টিকিট প্রয়োজন। ভার্সে টিকিট 55 টাকা।এর পর আপনার প্রায় সাড়ে4 কিলোমিটার ট্রেক করে পৌঁছাতে হবে। ট্রেক এক প্রকার সোজা। হাঁটুর সমস্যা না থাকলে বা খুব বয়স না হলে এটা করা যায়। প্রতি কিলোমিটার এ বিশ্রাম নেবার জায়গা রয়েছে। তবে এই ট্রেকে খাবার বা জল আপনায় হিলে থেকেই নিয়ে আসতে হবে। গাইড নিতে পারেন, সে আপনাদের সাহায্য করবে। আমরা হোম স্টে থেকেই গাইড নিয়েছিলাম। আর দুপুরের খাবার হোম স্টে থেকে পাঠিয়ে দিয়েছিল। গাইড বাবদ 500-600 টাকা আপনার ধরে রাখতে হবে।

কখন আসবেন?
ভার্সে ফুলের স্বর্গ রাজ্য, আর এই ফুল ফোটে মে মাসের প্রথম থেকে 3য় সপ্তাহের মধ্যে। সাধারণ এক বছর বেশি আরেক বছর একটু কম ফুটে থাকে। 2020 তে খুব বেশি ফুল ছিল, আর আমরা 2021 এ যাবার ফলে খুব বেশি ফুল পাইনি। আশা করা যায় 2022 যে খুব বেশি ফুল ফুটবে। এখানে রয়েছে 6 ধরণের রোডডেনড্রোন বা গুরুশ। এই জন্য এই জায়গার আরেক নাম গুরুশ কুঞ্জ।
হোম স্টে


ট্রেক রাস্তা

Thursday, 7 January 2021

মুর্শিদাবাদ ভ্রমণ গাইড - Murshidabad Travel Guide on Bhromon

লেখাটি কেমন লাগল দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।  আমার ভ্রমণের Youtube চ্যানেল Bhromon India  

"খোকা ঘুমালো | পাড়া জুড়ালো | বর্গী এলো দেশে"

1700 খ্রিস্টাব্দে (প্রায়) বাংলায় বর্গী আক্রমণে অশান্ত হয়েছিল। বর্গীদের আটকিয়ে বাংলায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছিলেন বাংলার প্রথম নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ। সুষ্ঠ শাসনের স্বার্থে তিনি বাংলার তৎকালীন রাজধানী ঢাকা থেকে সরিয়ে বাংলার প্রায় কেন্দ্রে নিয়ে আসেন, ভাগীরথী নদীর তীরে। এর পর তিনি তার রাজধানীর নাম নিজের নামের সাথে মিলিয়ে করে দেন মুর্শিদাবাদ (1703 দ্বিমত 1704)। আর এই মুর্শিদাবাদ এই ইংরেজদের সাথে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বাংলা তথা গোটা ভারতবর্ষ ধীরে ধীরে ইংরেজদের অধীনে চলে যায়। এই শহরের প্রতিটি কোনায় আজও ছড়িয়ে আছে জানা অজানা নানা ইতিহাস। এই ইতিহাস জানতে একবার ঘুরে আসা নবাবদের এই শহরে।

  • সংক্ষেপে বিশেষ তথ্য 
    • কি ধরনণের ঘুরবার জায়গা: ঐতিহাসিক
    • বছরের কখন ঘুরতে যাওয়া যায়:  যে কোনো সময়। তবে সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ গরম কম হবার ফলে ঘোরা আরামদায়ক হয়।
    • কত সময় প্রয়োজন ঘুরবার জন্য: অন্তত দুই দিন
    • কাছের বড় শহর: বহরমপুর
    • কিভাবে যাওয়া যায়: ট্রেন, বাস , প্রাইভেট কার

  • সংক্ষিপ্ত ইতিহাস 
  • কিভাবে যাবেন, include travel time and cost 
    • ট্রেন : কলকাতা (শিয়ালদহ) থেকে হাজার দুয়ারী, লালগোলা সহ অনেক ট্রেন যাচ্ছে বহরমপুর বা মুর্শিদাবাদ। সিট রিজার্ভ করে বা টিকিট কেটে উঠে পড়তে পারেন। সময় লাগবে প্রায় 3.5 থেকে 4.5 ঘন্টা।
    • বাস : ধর্মতলা অথবা এয়ারপোর্ট থেকে বাসে আসতে পারেন বহরমপুর বা মুর্শিদাবাদ এ। সময় লাগবে প্রায় 6 ঘন্টা।
    • গাড়িতে : নিজের গাড়িতেও আসতে পারেন মুর্শিদাবাদ এ। প্রায় 220 কিলোমিটার রাস্তা, সময় লাগবে প্রায় 6 ঘন্টা। রাস্তায় মায়াপুর, চুপির চর ঘুরে নিতে পারেন। কলকাতা থেকে বারাসত, হয়ে উত্তর বঙ্গ রোড ধরতে পারেন বা গঙ্গার পশ্চিম দিকের রাস্তাও নিতে পারেন। গুগলের সাহায্যে পৌঁছে যাবেন।
    • প্লেন : কলকাতা থেকে প্লেন যোগাযোগ নেই।
কি দেখবেন

হাজারদুয়ারী
মুর্শিদাবাদ এর দ্রষ্টব্য স্থানগুলোর মধ্যে সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য হল হাজার দুয়ারী। এই রাজপ্রাসাদ টির স্থাপনা করেছিলেন নবাব হুমায়ুনজা। এটি তৈরি করতে প্রায়  8 বছর (1829-1837) সময় লাগে ও মোট খরচ 17 লক্ষ টাকা। এখানে 1000 টা দরজার মধ্যে 900 টি আসল ও 100 টি নকল। বর্তমানে এটি একটি সুন্দর মিউজিয়াম যেখানে তৎকালীন বহু জিনিস যেমন নবাব এর ব্যবহার এর জিনিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছবি, আসবাবপত্র ও যুদ্ধের অস্ত্র রাখা আছে।
এটি খোলা থাকে সকাল 9 টা থেকে বিকাল 5 টা পর্যন্ত। করোনার জন্য টিকিট অনলাইনে কাটতে হচ্ছে। টিকিট মূল্য 20 টাকা। ভেতরে ছবি তোলা নিষেধ এবং ক্যামেরা সহ প্রবেশের অধিকার নেই। মোবাইল সুইচ বন্ধ করে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাওয়া যায়।

ইমামবাড়া
হাজার দুয়ারীর সামনেই আছে ইমামবাড়া। অবশ্য এখানে প্রবেশের অধিকার নেই, বাইরে থেকেই দেখে নিতে হয়। আর এই দূরত্বের মধ্যেই আছে ঘড়ি বাড়ি ও কামান।
হাজার দুয়ারীর সামনে থেকে ইমামবাড়া।  

মতিঝিল
মতিঝিল মুর্শিদাবাদের অন্যতম আকর্ষণ।  এখানে সাউন্ড ও ভিডিও এর মাধ্যমে বাংলার ইতিহাস দেখানো হয় যা অবশ্যই দেখা উচিত।  এই শো দিনে ৩ বার হয় তবে যদি বেশি দর্শক না থাকে তবে শেষ বার দেখানো হয় না।  বিকাল ৪:৩০ মিনিট নাগাদ প্রথম শো হয়।  বিকাল এ মতিঝিল ঘুরবার জন্য অনবদ্য।  এখানে প্রবেশের জন্য টিকিট লাগে এবং ভিডিও শো এর জন্য আলাদা টিকিট লাগে। দুটি টিকিট মিলে খরচ মোট ৫০ টাকা মতো।  

জগৎ শেঠের বাড়ি
জগৎ শেঠ ছিল ইংরেজ আমলের শুরুর আগে বাংলা তথা ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী ব্যাবসায়ী।  এক সময় বাংলার নবাব  এনার থেকে ধার নিতেন বিভিন্ন প্রয়োজনে।  জগৎ শেঠ ছিল ওনার উপাধি।  ইনি মীরজাফর এর সাথে ষড়যন্ত্র করে ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে সিরাজ দৌল্লাকে হারিয়ে বাংলার দখল বিদেশিদের হাতে যেতে সাহায্য করেছিলেন।  এনার এই ষড়যন্ত্র হয়েছিল জগৎ শেঠের এই বাড়িতে।  এই জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন। টিকিট ৪০-৫০ টাকা।  


কাঠ গোলাপের বাগান বাড়ি বা কাঠগোলা বাগানবাড়ি
এই বাড়িটির নাম নিয়ে দ্বিমত আছে।  অনেকে বলে এটা কাঠ গোপালের বাগানবাড়ি আবার অনেকে কাঠগোলা বাগানবাড়ি বলে।  হয়ত কাঠ গোলাপ নামই সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়ে কাঠগোলা হয়েছে।  যাই হোক ইটা অন্যতম সুন্দর জায়গা অবশ্যই যেতে পারেন।  ঘুরে দেখতে কমবেশি ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগবে এবং টিকিট ৩০ টাকা (২০২০) .  


এই বাগানবাড়ির মালিক জৈন ব্যাবসায়ী গোষ্ঠী এবং এখানে আছে একটা জৈন্য মন্দির।

নসিপুর রাজবাড়ীর চান্দার রথ 

কাটরা মজজিদ 



জাহানকোষ কামান 
এটি মুর্শিদাবাদের সব চেয়ে বড় কামান। খুব বেশি শব্দের কারণে এই মাত্র একবারই ব্যবহার হয়েছিল।  


সিরাজের সমাধী 
মুর্শিদাবাদ গিয়ে অনেকেই সিরাজের সমাধি না ঘুরেই চলে আছে।  একেবারেই এমন ভুল করবেন না।  সিরাজের সমাধি না দেখলে মুর্শিদাবাদ এর মূল ইতিহাসই বাদ পড়ে যাবে।  হাজার দুয়ারী বা অন্য সব কিছুই ইংরেজ আমলে তৈরি এবং প্রাক ইংরেজ যুগের। সিরাজের সমাধী খোশবাগে যা গঙ্গার অপর পারে। নৌকা বা ভুটভুটি করে গঙ্গা পার করে একটু হেটে পৌঁছে যেতে পারেন এই জায়গায়।  নৌকা ভাড়া ৪০-৫০ টাকা। 

খোশবাগ যাবার পথের দৃশ্য 



খোশবাগে সিরাজ দৌল্লার সমাধি চত্বরে বাচ্ছারা খেলা করছে 


স্বাধীন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ দৌল্লার সমাধি 




  • কোথায় থাকবেন 
মুর্শিদাবাদে থাকবার জন্য বহু হোটেল আছে।  দিন প্রতি ভাড়া ৭০০-৮০০ থেকে ২০০০-২৫০০ টাকায় পেয়ে যাবেন।  ১০০০-১২০০ টাকার হোটেল বেশ ভাল।  হাজার দুয়ারীর কাছে ও অনেক হতে পাবেন।  ভাড়া ৮০০-১০০০ টাকার মত।  
  • কোথায় খাবেন 
গোটা মুর্শিদাবাদে বহু খাবারের হোটেল আছে।  আমরা দুপুরের খাবার হাজার দুয়ারীর পেছনে ঢাকা হোটেল ও  হিন্দু হোটেলে খেয়েছিলাম। সবজি ভাত থালা ৬০ টাকা।  বেশ ভাল খাবার।  

কখন যাবেন ও কিভাবে ঘুরবেন 
মুর্শিদাবাদ বছরের যে কোনো সময় যেতে পারেন।  তবে গরমের কারণে পুজোর সময় থেকে শীত কালে গেলে বেশি ভাল লাগবে। 
 

টাঙ্গায়  চড়ে ঘুরছি আমরা, হাজার দুয়ারী এর কাছেই ভাড়া পাবেন  

হাজার দুয়ারীর পাশের সকল জায়গায় ঘুরবার জন্য টোটো বা ঘোড়ায় টানা গাড়ি নিতে পারেন। গাড়িই আপনার প্রায় সকল জায়গা ঘুরে দেখাবে।  খরচ পড়বে ৪০০-৫০০ টাকা।  তবে সিজিন বিশেষ পরিবর্তন হতে পারে।  জায়গা গুলি ভাবে ভাবে জানবার জন্য গাইড নিতে পারেন। তারা ভালভাবে বুঝিয়ে দেবে। 

এই ভ্রমণের ভিডিও দেখবার জন্য আমার youtube চ্যানেল এ দেয়া ভিডিও গুলি দেখে নিতে পারেন। 

পন্ডিচেরী ভ্রমণ গাইড

পন্ডিচেরী দক্ষিণ ভারতের অন্যতম ভ্রমণ স্থান। পন্ডিচেরী জায়গাটি তামিলনাড়ুর পাশে বলা ভাল তামিলনাড়ু ঘেরা ছোট্ট একটি কেন্দ্রশাসিত জায়গা।  পন্ডিচে...