Monday, 7 January 2019

ইস্কন মায়াপুর ভ্রমণের সম্পূর্ণ গাইড (ISKON Mayapur travel)


লেখাটি কেমন লাগল দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।  আমার ভ্রমণের Youtube চ্যানেল Bhromon India 

নবদ্বীপ পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে ও মায়াপুর ভাগীরথী ও জলঙ্গীর সংযোগস্থলে অবস্থিত। নবদ্বীপ ও মায়াপুর মূলত শ্রী চৈতন্য দেব (১৪১৮ - ১৫৩৩) ও ইসকন চন্দ্রোদয় মন্দিরের বিখ্যাত।  শ্রীচৈতন্য ভক্তদের কাছে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। তবে যে কেউ এখানে ঘুরবার জন্য আসতে পারে। সকল ধর্মের মানুষের অবাধ প্রবেশ আছে ইস্কন চন্দ্রোদয় মন্দিরে।
নির্মীয়মান ইস্কন মায়াপুর মন্দির 

  • সংক্ষেপে বিশেষ তথ্য 
    • কি ধরনণের ঘুরবার জায়গা: ধর্মীয় 
    • বছরের কখন ঘুরতে যাওয়া যায়: বছরের যে কোন সময়।  তবে শ্রী চৈতন্য দেবের জন্মদিন দোল পূর্ণিমায় ও রাশ উৎসব এখানের প্রধান উৎসব।
    • কত সময় প্রয়োজন ঘুরবার জন্য: সম্পূর্ণ জায়গা ভালভাবে ঘুরতে দুই দিন প্রয়োজন।
    • কাছের বড় শহর: কৃষ্ণনগর 
    • কিভাবে যাওয়া যায়: ট্রেন, বাস, প্রাইভেট কার 
  • সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বাংলায় সেন রাজাদের আমলে (১১৫৯-১২০৬) নবদ্বীপ ছিল বাংলার রাজধানী। লক্ষণ সেন গৌড় থেকে তার রাজধানী সরিয়ে আনেন নবদ্বীপে। ১২০৬ সালে লক্ষণ সেনের আমলে বখতিয়ার খিলজি নবদ্বীপ জয় করেন ও তখন থেকেই বাংলায় প্রথম মুসলিম শাসন শুরু হয়। তখন নবদ্বীপ ছিল বাংলার শিক্ষালাভের প্রধান পীঠস্থান।  শ্রী চৈতন্য দেব এই নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন।  শ্রীচৈতন্য দেবের জন্ম ভিটা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও নবদ্বীপে বর্তমানে ১৮৬ টি মন্দির আছে ও সব গুলিতেই ভজন ও কৃষ্ণনাম হয়। 


চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান (উইকিপিডিয়ার ছবি)
  • কিভাবে যাবেন
    • ট্রেন
      • হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে কাটোয়া লোকাল ধরে চলে আসুন বিষ্ণুপ্রিয়া হল্টে। সেখান থেকে টোটো পেয়ে যাবেন গঙ্গার ঘাটে যাবার জন্য, ভাড়া পড়বে ১০ টাকা তার পর ৩ টাকায় নৌকায় চলে আসুন মায়াপুর ঘাটে।  লঞ্চ ও আসে তবে ভাড়া একটু বেশি।  মায়াপুর ঘাট থেকে আবার টোটো করে পৌঁছে যাবেন মন্দিরে।  এভারে ও ভাড়া ১০ টাকা তবে চাইলে একটু হেটেও পৌঁছে যেতে পারেন। সোজা একটাই রাস্তা। বিষ্ণুপ্রিয়া হল্টে সব ট্রেন দাঁড়ায় না , টেন এর সময় দেখে নেবেন।
      • কৃষ্ণনগর নবদ্বীপের কাছের সবচেয়ে বড় শহর ও নদীয়া জেলার জেলাশহর।  কলকাতা থেকে অনেক ট্রেন কৃষ্ণনগর আসছে। আপনি সকালের দিকের যে কোন কৃষ্ণনগর লোকের ধরে চলে আসতে পারেন। কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগর স্টেশনের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার এর একটু বেশি ও সময় লাগে ২ ঘন্টা।  কৃষ্ণনগর স্টেশন থেকে অটো, টোটো বা বাস ধরে চলে আসুন নবদ্বীপঘাট। ২ টাকা দিয়ে জলঙ্গি নদীর খেয়া পার হয়ে আবার টোটো (১০ টাকা) ধরে বা হেটে (৫-৭ মিনিট) পৌঁছে যান মায়াপুর ইস্কন মন্দিরে।
সকাল ৭ থেকে ৯ টার মধ্যে অনেক গুলি ট্রেন আছে শিয়ালদহ ও হাওড়া থেকে নবদ্বীপ পৌঁছনোর জন্য। 
    • বাস: কলকাতা থেকে অনেক বাস আসছে সরাসরি মায়াপুরে। ইস্কনের বাস ও আছে সরাসরি কলকাতা থেকে।  সকালে এসে রাতে ফিরতে পারেন। তাছাড়া প্রাইভেট বাসে করে চলে আসুন কৃষ্ণনগর শহরে তার পর মায়াপুরের বাস ধরে সোজা চলে যান ইস্কন মন্দিরে।  নবদ্বীপে যাবার জন্য খেয়া পার করুন । 
    •  ইস্কন কলকাতা মায়াপুর ও মন্দির দর্শনের জন্য কলকাতা থেকে এসি বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে। প্রতিদিন সকাল ৫ টা ১৫ মিনিটে কলকাতা ছাড়ে ও সকাল ১১ টায় মায়াপুর পৌঁছায়।  আবার ফিরবার জন্য বিকাল ৪ টায় মায়াপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।  যাওয়া, ফেরা বা একই দিনে ফেরার বাস পাওয়া যায়।  এক দিকের ভাড়া ৪৭৫ টাকা। বাস, গাড়ি বা হোটেল বুক করবার জন্য ফোন নম্বর ৬২৯০৭৬৩৭৩০, ৮৪২০০৫০৯০২ ও ইমেইল contact@tourmayapur.com,  এই লিংকে ক্লিক করুন।
রাত্রি ৮:৩০ এ শেষ বাস নবদ্বীপ ঘাট ও মায়াপুর থেকে ছেড়ে আসে।  গ্রাম  এলাকা হবার জন্য রাস্তাঘাট ৮:৩০ তেই শহরের রাত ১২ টার সুনসান হয়ে যায়।  রাত্রে  ফিরবার পরিকল্পনা থাকলে আগের থেকে ব্যবস্থা করে নেবেন।  রাত্রে অটো বা টোটো পাওয়া যায় তবে যে কোনো ভাড়া চাইতে পারে।  ফিরবার ট্রেনও কম থাকবে আগে থেকে দেখে নেবেন। 

Update:
কোলকাতা এবং মায়াপুরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একমাত্র 
WBTC AC বাস 

BE19: কোলকাতা 🔷 মায়াপুর 

ভায়া- ধর্মতলা, মানিকতলা, উল্টোডাঙা, এয়ারপোর্ট, মধ্যমগ্রাম, বারাসাত, আমডাঙা, আওয়ালসিদ্ধি, জাগুলি, বিরহী, চাকদা, রানাঘাট, ফুলিয়া, শান্তিপুর, দিগনগর, কৃষ্ণনগর নবদ্বীপ মোড়/হাইরোড, বাহাদুরপুর, মায়াপুর মোড়, চৌগাছা, শোনডাঙ্গা, বামনপুকুর, শ্রী শ্রী মায়াপুরধাম ইসকন মন্দির

 সময়সূচী 

মায়াপুর যাওয়ার সময় 
ধর্মতলা থেকে ছাড়ে - 7:00 a.m.
বারাসাত থেকে ছাড়ে - 8:05 a.m.
নবদ্বীপ মোড় থেকে ছাড়ে - 10:30 a.m.

কোলকাতা ফেরার সময় 
মায়াপুর থেকে ছাড়ে - 4:00 p.m.
নবদ্বীপ মোড় থেকে ছাড়ে - 4:30 p.m.
বারাসাত থেকে ছাড়ে - 7:15 p.m.

বাসটি শুধুমাত্র শুক্রবার, শনিবার, রবিবার ও সোমবার চলে

Seat booking website - Redbus app

    • গাড়িতে: কলকাতা থেকে মায়াপুরের সড়ক পথে দুরুত্ব ১৩০ কিলোমিটার। গাড়িতে করে ন্যাশনাল হাইওয়ে ৩৪ ধরে রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর পার করে  ৩:৩০-৪:০০ ঘন্টায় পৌঁছে যাবেন মায়াপুরে। মায়াপুর ইস্কন মন্দিরে গাড়ি রাখার সুবন্দোবস্ত আছে। তবে গাড়ি নিয়ে নবদ্বীপি যেতে হলে একটু ঘুরে আসতে হবে।  অথবা মায়াপুরে গাড়ি রেখে খেয়া পার হয়ে চলে আসতে পারেন। ইস্কনের মাধ্যমে গাড়ি বুক করতে পারেন, তারজন্য ওপরে দেয়া লিংকে ক্লিক করুন বা ফোন করুন।
    • প্লেন: মায়াপুর ও নবদ্বীপের কাছে কোন বিমানবন্দর নেই।  আপনার কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে সেখান থেকে গাড়ি বা ট্রেনে করে আসতে হবে।  কলকাতা ইস্কনের গাড়ি সার্ভিস বিমানবন্দর থেকে পাওয়া যায়। 

  • রাস্তায় কি কি দেখাবার আছে: মায়াপুর বা নবদ্বীপ এলে কৃষ্ণনগর শহরটি অতিঅবশ্যই ঘুরে নেবার জন্য অনুরোধ করবো। কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ী, রোমান ক্যাথলিক চার্চ ও জলঙ্গীর পশে ঘূর্ণিতে মৃৎশিল্প অতি চমৎকার। কৃষ্ণনগর ভ্রমণ সম্পর্কে জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।
কৃষ্ণনগর চার্চ 
  • কোথায় কোথায় ঘোরা যায়
    • মায়াপুর ইস্কন চন্দ্রোদয় মন্দির মায়াপুরের মুল আকর্ষণ । এখানে আনেকগুলি মন্দির আছে। 

চন্দ্রোদয় মন্দিরের প্রবেশ দ্বার



ভজন কুঠির: মন্দিরে প্রবেশের পরই বা দিকে দেখতে পাবেন বিরামহীন নাম কীর্তনের মন্দির। এটি পুরানো মন্দির ও খড়ের ছাওনি, সেখানে আনেক দেশি বা বিদেশি ভক্তগনের কৃষ্ণ নাম কীর্তন শুনতে পাবেন। 

ভজন কুঠির 

সমাধি মন্দির:  মূল প্রবেশ দ্বারের ডান দিকে একটা বড় মন্দির দেখতে পাবেন সমাধি মন্দির। সমাধি মন্দিরের ভেতরে ছবি তোলা নিষেধ। মোবাইল ও জুতো বাইরে জমারেখে ভেতরে যেতে হবে।  দর্শনার্থী দের জন্য সমাধি মন্দির সকাল ৭:৩০ থেকে ১ টা পর্যন্ত ও বিকাল ৩:৩০ টা থেকে ৮:৩০ পর্যন্ত খোলা। 
সমাধি মন্দিরের ভেতর শ্রী শ্রী প্রভুপাদ পুষ্পা প্রভুর স্বর্ণ মূর্তি স্বর্ণ সিংহাসনে অধিষ্ঠান করছেন (ছবিতোলা নিষেধ )। এই মন্দিরের দোতলায় শ্রী শ্রী প্রভুপাদ এর বেক্তিগত ঘর ও জিনিস  দেখতে পাবেন।  তবে এর জন্য আপনাকে টিকিট কাটতে হবে।  প্রভুর ব্যাবহৃত এম্বাসেডর গাড়িটি সমাধি মন্দিরের সামনে দেখতে পাবেন।  


সমাধী মন্দিরের পেছনে সূর্যাস্ত 

ভজন কুঠিরে প্রভুর মূর্তি 

শ্রী শ্রী রাধা মাধব মন্দির বা চন্দ্রোদয় মন্দির

ভগবান কৃষ্ণের ভক্তদের জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং সারা বিশ্ব থেকে প্রচুর পর্যটককে আকর্ষণ করে। মন্দিরের পরিবেশটি শান্তি এবং নির্মলতায় পূর্ণ। মন্দিরের অত্যাচার্য কাজ এবং প্রশান্ত পরিবেশ পর্যটকদেরএখানে টেনে নিয়ে আসে।  রাধা মাধব মন্দিরটি মূল বেদীর চন্দ্রদায়া মন্দির হিসাবেও পরিচিত।এই এই মন্দিরে রয়েছে  শ্রী কৃষ্ণ এর মূর্তি যেখানে তিনি সখী দ্বারা পরিবেষ্টিত।    





নির্মীয়মান বড় মন্দির: প্রবেশদ্বার এর বা দিকে তৈরী হচ্ছে ইস্কন এর বড় মন্দির।  এটি এখনো অসম্পূর্ন ও আনুমানিক ২০২২ সালে এটি সম্পূর্ণ হবে।
Height comparison of the main temple



প্রধান মন্দির যেটি এখন তৈরী হচ্ছে 

ড্রোনের মাধ্যমে আকাশ থেকে তোলা নির্মীয়মান মন্দির 

এক রাশিয়ান বিদেশিনী ভক্ত কৃষ্ণনাম ও শ্রী চৈতন্য দেবের নাম প্রচার করছেন।

চৈতন্য লীলা প্রদশর্নী, এটি মূল মন্দিরের ভেতরে অবস্থান করছে।  ভক্ত গণের জন্য এটি খোলা থাকে সকাল ১০ টা থেকে ১ টা ও বিকাল ৪ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত। 

গোশালা:  ইস্কন এর নিজস্ব গোশালায় প্রায় ২০০ গরু ও বলদ আছে।  এদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য একজন গরুর ডাক্তার বা পশু চিকিৎসক সবসময় উপস্থিত থাকেন।  এই গরুর দুধের তৈরী খাবার যেমন ঘি, দই ও গোমূত্র বিক্রি হয়। এখানে কিছু বলদ এতটাই সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান যে তাদের  মানুষ পুনরায় মায়াপুর ভ্রমণ করেছেন ও গোশালা পরিদর্শন করেছেন। 
ফুলের সমারোহ 

পূজা ও আরাধনার সময়:  মন্দিরে ভোর থেকে রাত্রি পর্যন্ত আরাধনার সময় নিন্মরূপ -

শীতকালে  ভোর ৪:৩০  ও অন্যসময় ৪:১৫ - মঙ্গল আরতি 
সকাল ৭:১৫ - দর্শন আরতি 
সকাল ৮ টা - ভাগবতাম আলোচনা 
দুপুর ১২ টা - ভোগ আরতি 
বিকাল ৪ টা - ধুপ আরতি 
শীতকালে সন্ধ্যা ৬ টা  ও অন্য সময় ৬:৩০- সন্ধ্যা আরতি 
সন্ধ্যা ৭:৩০ - ভগবৎ গীতা পাঠ 
রাত্রি ৮:১৫ - শয়ন আরতি 

রাত্রির মনোরম দৃশ্য  

  • কোথায় খাবেন: মায়াপুর মন্দির দর্শন করে প্রসাদ না খেয়ে বাইরে খাবার কোনো অর্থ নেই। মন্দিরের প্রসাদ অত্যান্ত সুস্বাধু ও  খরচ ও কম।  দুপুরে ও রাত্রে খাবারের ব্যাবস্থা আছে।  দুপুরে খাবার জন্য ১২ টার মধ্যে কুপন সংগ্রহ করতে হবে।  গীতা ভবন, গদা ভবন , নামহট্ট ভবনে খাবার পাওয়া যায়।  দুপুরের খাবার ৫০ থেকে ৭০ টাকা ও রাত্রের খাবার ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে থাকে।  বাচ্চা দের জন্য হাফ দামে টিকিট নিতে হবে।  রাতের জন্য টিকেট বা কুপন সন্ধ্যার আগে সংগ্রহ করতে হবে।  রাত্রের খাবার রাত্রি ৮ টায় পরিবেশিত হয়। 
    • খাবারের মেনু : খাবারের মেনু প্রতি দিন পরিবর্তিত হয় তবে কম বেশি একই রকম থাকে।  যেমন একদিন নামহট্ট ভবনের মেনু এমন ছিল - অন্ন বা ভাত, শাক / ঘন্ট , পাঁচ মেশালি সবজি, ডাল , মূল সবজি , চাটনি , মিষ্টি বা পরমান্ন।  অনেক সময় পনির এর সবজি মূল সবজিতে  দেয়া হয়।  এবারে রাত্রের খাবারে ভাতের সাথে রুটি ও পরিবেশন করা হয়। পরিবেশন অতি সুন্দর।  হরেকৃষ্ণ নাম করে খাবার পরিবেশন শুরু হয়।  খাবার প্রথম বার  পরিবেশন এর পর দ্বিতীয় বার জিজ্ঞাসা করে প্রয়োজন অনুসারে দেয়া হয়।  তৃতীয় বার এক জন এসে আবার জিজ্ঞাসা করে যায় কিছু  কিনা।  মেঝেয় কার্পেট পেতে প্লেট ও জল সহ পরিবেশিত হয়। 
    • নির্দিষ্ট সময় খাবার পরিবেশন ছাড়া গীতা ভবনের কাছে একটা খাবারের দোকান আছে, হালকা টিফিন  জাতীয় খাবার বিক্রি করা হয়। 

খাবার পরিবেশনের প্রস্তুতি 
খাবার পরিবেশন
  • কোথায় থাকবেন:  মায়াপুর এ রাত্রে  থাকবার জন্য মন্দিরের ভেতরে থাকা সবচেয়ে ভালো।  তবে একান্তই যদি রুম না পান তবে মায়াপুরের কোনো হোটেলে পরিবার নিয়ে না থাকারচেষ্টা করবেন।  বরং খোয়া পার হয়ে নবদ্বীপের কোনো হোটেলে থাকুন। মন্দিরের মধ্যে থাকবার জায়গা  গুলি হলো -
    • গীতা ভবন : ৮০০ থেকে ২০০০ টাকা রাত প্রতি  ও খাবার ৪০-৭০ টাকা , ফোন ০৩৪৭২-২৪৫৩৭০
    • গদা ভবন ভাড়া রাত প্রতি ১০০ টাকা থেকে শুরু।  ফোন ০৩৪৭২-২৪৫৪৯৪/২৪৫৬২০
গদা ভবনের ভাড়া ও যোগাযোগ এর নম্বর 
    • কঞ্চ ভবন  ফোন নম্বর ও ইমেইল +৯১-৯৪৭৪৭৫১২০২, mghb108@gmail.com
ঘর ভাড়া করবার জন্য যোগাযোগ করুন - ফোন নম্বর ৬২৯০৭৬৩৭৩০, ৮৪২০০৫০৯০২ ও ইমেইল contact@tourmayapur.com,  এই লিংকে ক্লিক করুন।
  • নবদ্বীপ শহর: নবদ্বীপ এক সময় বাংলার রাজধানী ছিল ও শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুরর জন্মভূমি।  এখানে এখনা  প্রায় ১৯০ টি মন্দির আছে যেখানে ভজন ও কৃষ্ণনাম হয়ে থাকে।  নবদ্বীপ ছিল সেন সাম্রাজ্যের রাজধানী ও তৎকালীন বাংলার রাজধানী।  একসময় নবদ্বীপ বাংলার শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রধান স্থান হিসাবে  প্রকাশ পেয়েছিলো।  
  • মহাপ্রভুর জন্মস্থান: মহাপ্রভুর জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক থাকলেও একটি মন্দির আছে যেখানে প্রভুর জন্মস্থান বলে মানা হয়।  ছবি আগে দেয়া হয়েছে। 
  • মহাপ্রভুর মাসির বাড়ি 
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: ছবিটি পারমিতা সরকারের ফেসবুক থেকে নেওয়া 
  • বল্লাল সেনের ঢিপি মায়াপুরের কাছে বামুনপুকুর গ্রামে আছে এক সময়ের বাংলার শাসক বল্লাল সেনের রাজবাড়ী যা বল্লাল সেনের ঢিপি নামে প্রচলিত। এটি বাংলার সেন সাম্রাজ্যের চিহ্ন বহন করছে।   এটি ৩০ ফুট উঁচু ও ১৩০০ বর্গ ফুটের।  এটি ১৯৮২ থেকে ১৯৮৯ সালের মধ্যে প্রত্নতত্ব বিভাগ আবিষ্কার করে।  মায়াপুর থেকে রিক্সায় ৬০-৭০ টাকায় এটি ঘুরে আসতে পারেন। 
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: ছবিটি পারমিতা সরকারের ফেসবুক থেকে নেওয়া 
  • রাধাকুন্ড ও শ্যামকুন্ড মায়াপুরে অবস্থিত।  সময় করে এই জায়গা টিও দেখে নিতে পারেন। 
  • ৫০০ বছরের পুরোনো কনক চাপা গাছ মায়াপুর ও নবদ্বীপ এর অন্যতম আকর্ষণ অবশ্যই এটি একবার দেখে নেবেন। 
  • ভাগীরথী ও জলঙ্গি নদীর মোহনা অন্যতম আকর্ষণ।  জলঙ্গি নদী এখানে ভাগিরথীতে মিশে গিয়েছে আর এই জায়গাটাও অন্যতম আকর্ষণ। 
জলঙ্গি নদীতে খেয়া পারাপার 

আশাকরি আপনার লেখা টা ভালো লেগেছে ও তথ্য গুলি মায়াপুর ও নবদ্বীপ ভ্রমণের জন্য উপকারে আসবে।  দয়া করে লেখাটা আপনার বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করবেন।  ধন্যবাদ এই লেখাটি সময় দিয়ে পড়বার জন্য।

যদি  আপনার কোনো ছবি এখানে  দিতে চান কমেন্ট করে জানান।  আপনার ইমেইল বা ফেসবুক লিঙ্ক দিতে  ভুলবেন না। 


চন্দ্রোদয় মন্দিরের ভিডিওটি দেখতে অনুরোধ করবো 

1 comment:

পন্ডিচেরী ভ্রমণ গাইড

পন্ডিচেরী দক্ষিণ ভারতের অন্যতম ভ্রমণ স্থান। পন্ডিচেরী জায়গাটি তামিলনাড়ুর পাশে বলা ভাল তামিলনাড়ু ঘেরা ছোট্ট একটি কেন্দ্রশাসিত জায়গা।  পন্ডিচে...